নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
উখিয়া উপজেলা সদর দারােগা বাজারে শতবর্ষের পুরােনাে ভােগদখলীয় জমিতে গৃহ নির্মাণে হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক বাঁধা দেয়ার ঘটনায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানা গেছে। একটি অসাধু চক্র, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের হীন স্বার্থে মুসলিম পরিবার ও সনাতনী সম্প্রদায়ের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিতে কিংবা কোন সাম্প্রয়ায়িক উস্কানির অপতৎপরতা দিতে কিছু লোক মেতে উঠেছে মর্মে অভিযােগ রয়েছে।
সুদীর্ঘকাল উক্ত ষিয়টি কেনইবা সুরাহা হয়নি এ নিয়ে স্থানীয় মুসলিম-সনাতনী মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
গত শনিবার (১০ এপ্রিল), অত্র প্রতিবেদক, সরেজমিন উখিয়ার দারােগা বাজারের পাশে অবস্থিত একটি বহুবছরের পুরানো বাড়ির আঙ্গিনায় গিয়ে দেখতে পায়, ওয়ালা পালং মৌজার ৯১৬ নং খতিয়ানে ৭০২৬ দাগ, ৭৩১৭ দাগের জমি যা ২২/১০/৫৩ ইংতে খরিদসুত্রে মৃত জাকির হােসেন মুন্সীর নামে বিএস লিপিবদ্ধ রয়েছে। সম্প্রতি ওই জমিতে একটি গৃহ নির্মাণ শুরু করলে উখিয়া থানা পুলিশ ওই স্থানে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানায়।
এর আগে মুসলিম পরিবারকে চাপে ফেলতে অকারণে প্রধান সড়কে অবরোধ করে। যা ওসি উখিয়া থানা ও সহকারি কশিনার(ভুমি) উখিয়া তাদেরকে বিরোধ সুরাহা করার আশ্বাসে শান্ত করে।
এসময় সনাতনী সম্প্রদায় রবী, রতন ও মৃদুলের উপস্থিতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীর নিকট বিচারকার্যটি সমাধা উপলক্ষে রয়েছে বলে জানানো হয়।
দীর্ঘ শতবর্ষ বংশানুক্রমে মৃত বাচামিয়া অতপর তার পুত্র জাকের হােসেন মুন্সীর মৃত্যুস্থলে রফিক, শাহাব, খুরশিদা, নাজিম, জসিম, মোসলেহ উদ্দিন, মিসবাহ, কফিল, সাজেদা, খালেদা ও শাহিন ওয়ারিশসুত্রে প্রাপ্তমতে কয়েকটি বসতবাড়িতে বসবাস করে আসছে।
উল্লেখ্য যে, হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্মশান মুলত: আরএস জরিপে মন্তব্যের কলামে ১-১২শতক জমি লিপিবদ্ধ রয়েছে, যাহা বর্তমানে ২নাম্বার বনসম্পত্তি হিসেবে খতিয়ানে চুড়ান্ত লিপিবদ্ধ আছে। যার উত্তরাংশে সনাতনী সম্প্রদায়ের গুটিকয়েক লোকদের মাধ্যমে অন্তত ৪০টির মত দোকান গৃহ ভাড়ায় প্রদান করা হয়েছে, যা সরকার বা পুজা কমিটি জানেনা। তৎলাগোয়া সর্বসাধারণের চলাচলের রাস্তাটি ওই চুড়ান্তলিপির অন্তর্ভক্ত। অনুরুপ পুর্বাংশে সাইফ হোটেলসহ (পৃথক মালিক) ৮টির মত দোকান মালিকদের জবরদখলে রয়েছে। এবং লম্বালম্বি অবস্থায় কবরস্থানের ভুমি বিদ্ধমান। পশ্চিমাংশে উজ্জল, হারাধন চক্রবর্তী, হারাধন ড্রাইভার, সজল ও কাজলের নিজ বাস্তভিটা। দক্ষিণাংশে মুন্সি পরিবারের নিজ নামীয় ৭০২৬, ৭০২৯ দাগ ৭৩১৭ বাটা দাগের জমিসহ তৎলাগোয়া বনবিভিাগের আংশিক জমি মুন্সি পরিবারের ভোগদখলে রয়েছে। উল্লেখিত লোকদের বিরুদ্ধে গোপনীয় সংযোগ রেখে শুধুমাত্র মুন্সি পরিবারে বিরুদ্ধেই লেগে রয়েছে।
এদিকে কথিত শ্বসান বা বনভুমির সাথে লাগোয়া বসবাসরত মাস্টার গোপাল বিশ্বাসের পুত্র দীপন বিশ্বাস জানান, উজ্জ্বল দাশ, হারাধন চক্রবর্তী, জাফর আলম, সজল ধর, প্রদীপ ধর, যতীন্দ্র দাশ, হারাধন ড্রাইভার, শ্যামল দাশ, নুরুল আলম, বাদশা মিয়া সওদাগর ও বাদল কর্মকার সহ অনেকের বিরুদ্ধে শ্বসান ভুমির জবরদখল থেকে উচ্ছেদকল্পে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে ২২/৮/২০০৯ অভিযোগের ভিত্তিতে নোঠিশ করেন। সেইমতে যথারীতি প্রশাসনের কার্যক্রমও শুরু হয়। কিন্ত এসব লোকদের বিরুদ্ধে আইনী প্রক্রিয়া না করে শুধুমাত্র একটি মুসলিম পরিবারে পিছু পড়ায় যা এলাকায় সচেতনকে ভাবিয়ে তুলেছে।
মুন্সি পরিবারের সদস্যরা জানান, উল্লেখিত ঘটনাটি সহকারি জজ আদালতে adverse possetion মামলা বিচারাধিন আছে। ইত্যবসরে সনাতনী সম্প্রদায়ের চাপেরমুখে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক মহোদয় সরেজমিন পরিদর্শণ করেন। এসময় উপস্থিত উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে একটি চিরস্থায়ী সমাধান কল্পে প্রাচীর করার জন্যও পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, ওই আংশিক জমিটি ভুমিহীন পরিবারের প্রতি আদিষ্ট হয়ে জাকের হোসেন মুন্সির নামে ১/১২/৮৬ইং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কক্সবাজার মহোদয় শ্রেণী পরিবর্তন করে অনুমোদন ঘোষনা করেন। বর্তমানে মামলাটি সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে চলমান রয়েছে।