নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে তিনদিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে তিন বন্ধু মিলে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৬ জুন) দুপুরে অপহৃত ওই ছাত্রীকে উপজেলার বাগবাড়িয়া কবরস্থান এলাকায় অসুস্থ অবস্থায় ফেলে যাওয়া হলে স্থানীয়রা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জেলা সদরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রী গত ১৩ জুন সন্ধ্যায় প্রতিবেশী এক ছেলের সঙ্গে মুদি দোকানে কেনাকাটা করতে যায়। এ সময় উপজেলার পেঁচাইন গ্রামের আম্বর আলীর ছেলে রমজান আলীর নেতৃত্বে একই গ্রামের জাকারিয়া, রাউৎগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে রায়হান ও আবু তালেবের ছেলে মেহেদী হাসান মিলে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীর পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর তাকে না পেয়ে ঘটনার পরদিন (সোমবার) সকালে তার বাবা বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে অপহরণকারীদের শনাক্ত করে। ওই ছাত্রীকে ফিরিয়ে দিতে পুলিশ অপহরণকারীদের পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে তাদের পরিবার অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বুধবার দুপুরে বাগবাড়িয়া কবরস্থান এলাকায় ওই ছাত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, অপহরণকারী মেহেদী হাসানের সহযোগিতায় তার তিন বন্ধু রমজান, রায়হান ও জাকারিয়া ওই ছাত্রীকে অপহরণের পর গণধর্ষণ করে।
ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়েকে অপহরণ করে তিনদিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে একটি কক্ষে তারা গণধর্ষণ করেছে। অপহরণকারীরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার মেয়েকে রাস্তার মধ্যে ফেলে যায়। তাদের শর্ত ছিল মেয়েকে ফিরে পেতে ওই সড়কে আমাদের কোনো লোকজন থাকতে পারবে না। তাদের কথামতো ওই স্থানে আমরা কেউ ছিলাম না। ফেলে যাওয়ার পর আমাদের খবর দিলে আমরা বাগবাড়িয়া কবরস্থান এলাকা থেকে মেয়েকে নিয়ে আসি।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী ধর্ষণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।