আইকন নিউজ ডেস্কঃ
আমার এক আত্বীয়ের জন্য ছেলে দেখতে এসেছি। মেয়েটা গত বছর মাস্টার্স পাশ করেছে। দেখতে শুনতে বেশ ভালো। যথেষ্ট সুন্দরী। সমস্যা একটাই, আর্থিক অবস্থা দূর্বল। বাবা অনেক কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। মেয়েটা ছিল যথেষ্ট ভদ্র এবং লক্ষী।এমন ভদ্র মেয়ে আমি কম দেখেছি।
ছেলে দেখতে শুনতে বেশ ভালো। ছেলের বাবা পরহেজগার মানুষ। গত বছর হজ করে এসেছেন। আমাদের মোটামুটি ছেলে এবং তার পরিবার পছন্দ হলো।
আমরা ছেলের বাবাকে বললাম, মেয়ের বাবার আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল নয়,উনারা কিছু দিতে পারবেন না। যদি মেয়েকে আনতে হয়, এক কাপড়ে আনতে হবে।
ছেলের বাবা বললেন, আলহামদুলিল্লাহ! আমরাও যৌতুক নিয়ে ছেলেকে বিয়ে করাবো না, আপনারা খুশি হয়ে যা দিবেন, আমরা খুশি মনে তা মেনে নেবো। আপনাদের মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে। মেয়ে আমাদের বাসায় রাজরানী হয়ে থাকবে!
আমরা সবাই ধন্য ধন্য করলাম।বিয়ের দিনতারিখ ঠিক হয়ে গেল। আমরা খুশি মনে বাড়ি ফিরে এলাম।
মেয়ের অনেক আর্থিকভাবে স্বচ্ছল আত্মীয় স্বজন আছে। যতোই বলা হউক এক কাপড়ে মেয়ে দেওয়া হবে, তা কখনোই সম্ভব নয়। অন্তত পক্ষে ছেলের ঘর সাজিয়ে দিতে হবে। এটাই নিয়ম!
একেকজন আত্মীয় একেকটা ফার্নিচার দেওয়ার অঙিকার করলো। কেউ টিভি, কেউ ফ্রিজ, কেউ খাট উপহার দিবে তো অন্য কেউ সোফা। এভাবেই বিয়ের আয়োজন চললো।
দুইটা পিকআপে করে বিয়ের দুইদিন আগে সমস্ত ফার্নিচার ছেলের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হলো। আলমারি, খাট, সোফা,ড্রেসিং টেবিল, ফ্রিজ, টিভি কোনটাই বাদ গেল না।
কিছুক্ষণ পর খবর এলো, জামাই বাড়ি থেকে টিভি এবং সোফা ফেরত পাঠানো হয়েছে। এগুলো পছন্দ হয়নি!
টিভি উপহার দিয়েছিল মেয়ের ফুপু। সামসাং টিভি। কিন্তু ছেলের পছন্দ হচ্ছে সনি ব্রাভিয়া! সামসাং টিভি পছন্দ তার নয়। ছেলের বাবার কাছে সোফা পছন্দ হয়নি। তাদের স্টাটাসের সাথে এগুলো যায় না। তাই ফেরত পাঠানো হয়েছে!
মেয়ের বাবা ফার্নিচার ফেরত এসেছে শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো। এখন উপায়?
যে দোকান থেকে সামসাং টিভি কেনা হয়েছে, সেই দোকানে গিয়ে টিভি পরিবর্তন করে আনা হয়। সোফাও পরিবর্তন করে আরেকটু দামী সোফা কেনা হয়। তারপর পাঠানো হয় ছেলের বাড়ি। এবার ফার্নিচার তাদের পছন্দ হয়!
তাদের সংসার বেশিদিন টেকেনি। শুনেছি ছেলের চরিত্র ভালো ছিল না৷ নে*শা করতো, জু*য়া খেলতো।
সেদিন বুঝেছি, শুধু রুপ গুন এবং লেখাপড়া থাকলেই হবে না, সুখী হতে হলে একটা মেয়ের বাপের টাকা লাগে এবং সাথে লাগে ভাগ্য!