আইকন নিউজ ডেস্কঃ
উখিয়ার সদর রাজাপালং ইউনিয়নের মধুরছড়া আশ্রয় ক্যাম্পে বিবদমান সন্ত্রাসী কর্তৃক মোহাম্মদ শাহ নামে আবারও এক রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে।
বুধবার সন্ধ্যার পর উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৭, ব্লক-৮৪ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ শাহ উখিয়া সদর ইউনিয়নের ১৭ নং ক্যাম্পে আশ্রিত মৃত আব্দুল আলীর পুত্র।
জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা মোহাম্মদ শাহ কে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে উদ্ধার করে ক্যাম্প হাসপাতালে প্রেরণ করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সুত্রে জানা যায়, দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ব্যক্তি মিয়ানমারের সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্য এবং ইতিপুর্বে রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত আরসা কমান্ডার মোহাম্মদ হাশিমের সহযোগী ও আরসা সদস্য বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা।
১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোহাম্মদ শাহ ক্যাম্পের একটি দোকানের সামনে কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মোহাম্মদ শাহকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে মোহাম্মদ শাহ’র গলায় গুলি লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোহাম্মদ শাহকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এপিবিএন পুলিশ জানায়, নিহত মোহাম্মদ শাহ আরসা সেকেন্ড-ইন-কমান্ডার ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মো. হাশিমের সহযোগী ছিলেন। গত মে মাসে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর গুলিতে হাশিম খুন হলে মোহাম্মদ শাহ ক্যাম্প ছেড়ে মিয়ানমারে আত্মগোপনে ছিলেন। কয়েক দিন আগে মোহাম্মদ শাহ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আবার এই ক্যাম্পে এসে আশ্রয় নেন।
নিহত ব্যক্তির স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, ঘরের ভেতর সব সময় নেটওয়ার্ক থাকে না। তাই রাত আটটার দিকে তাঁর স্বামী মুঠোফোনে কথা বলার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে পাশের একটি দোকানে যান। হঠাৎ কিছু অপরিচিত লোক দোকানে এসে তাঁর স্বামীকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে দ্রুত তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সুত্রে জানা যায়, ১৫ জুন রাতে কুতুপালং ক্যাম্পের সি-ব্লকে হামলা চালায় কতিপয় আরসা সদস্য। এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আরেকটি গ্রুপ মুন্নাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে আরসা সদস্য মো. সলিম উল্লাহ নিহত হন। তিনি কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-২, পশ্চিম) সি-২ ব্লকের বাসিন্দা আবদুস শুক্কুরের ছেলে। সলিম উল্লাহ আরসার সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সলিম হত্যা হামলায় এপিবিএন পাঁচজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।