ঢাকাশুক্রবার , ২৫ আগস্ট ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

২৫-শে আগষ্ট, ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা গনহত্যা বা কালো দিবস হিসেবে পালন করেছে।

admin
আগস্ট ২৫, ২০২৩ ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

এম আর আয়াজ রবি

আজ ২৫-শে আগষ্ট। ২০১৭ সালের আজকের দিনে এক প্রকার প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়েই জন্মভূমির মায়া ত্যাগ করে স্থল বা নৌপথ ডিঙিয়ে এক অজানা শংকায় পাড়ি জমিয়েছিল লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাসীমান্তবর্তী দেশ বাংলাদেশে। সারা বিশ্ব বিস্ময়ে তাকিয়েছিল নদীর বাণের মতো সেই সময়ে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অপেক্ষমান ছিল লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাদের সারি। রোহিঙ্গাদের শেষ সম্বলটুকু ছেড়ে বা অবলম্বন করে পিঁপড়ের ঝাঁকের মতো অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অনিশ্চিত এক যাত্রায়। হতবাক হয়েছিল পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতায় ও বদান্যতায় উখিয়া টেকনাফের ৩১ টি ক্যাম্পে আশ্রয়প্রাপ্ত হয়েছিল মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্ত্যুচ্যুত প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।

এই দিনটিকে রোহিঙ্গারা কালো দিবস আখ্যা দিয়ে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন। এ উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পেসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন পালন করেছেন রোহিঙ্গারা।

সরেজমিনে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে আশপাশের ক্যাম্প থেকে হাজার হাজার লোকজন খেলার মাঠে জড়ো হতে শুরু করেন। ক্যাম্পেইন সমাবেশে পুরুষদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরাও যোগ দেন। এ সময় পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি তুলেন।

রোহিঙ্গা ঢলের ৬ বছরে রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবসের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার শোয়াইব, মাস্টার নুরুল আমিন, মাস্টার জুবায়ের, মোহাম্মদ ইউসুফ ও মাস্টার কামাল প্রমুখ।

সমাবেশে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, আমরা ( রোহিঙ্গারা) আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই। আমরা আজকের দিনটাকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করছি কারণ এদিনে মিয়ানমার জান্তা সরকার আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে জাতিগত গণহত্যা চালিয়েছে। আমাদেরকে এক অনিশ্চিত অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। আমরা বাস্ত্যুচ্যুত হয়ে এই দেশে আর কত বছর থাকবো। আমরা আর থাকতে চাই না। আমরা স্বদেশে ফিরতে চাই।

সাধারণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী সৈয়দউল্লাহ বলেন, মিয়ানমার আমাদের দেশ, অনতিবিলম্বে আমাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে। বাংলাদেশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে প্রত্যাবাসন সফল করতে দেশটির পাশে থাকতে হবে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলের মংডু, বুচিদং ও রাসেথং জেলার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। সে সময় প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল নামে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফে এসে আশ্রয় নেয়। ওই দিনটি স্মরণে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা রোহিঙ্গা জেনোসাইড রিমেম্বার ডে পালন করে আসছে।

জানা গেছে, রোহিঙ্গা গণহত্যার ৬ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উখিয়া টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা দিবসটি পালন করেন। স্বদেশে সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের দাবিতে পোস্টার, প্লেকার্ড, ব্যানার হাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ শিশুসহ মুর্হুমুর্হু স্লোগানে মুখরিত ছিল। সাথে তারা সেখানে মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার, দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলো হলো- মিয়ানমারে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, সীমিত সময় রাখা যাবে মিয়ানমার ট্রানজিট ক্যাম্পে, সকল রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিজস্ব সহায়-সম্বল ফেরত, প্রত্যাবাসনের সময় বেঁধে দেওয়া, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, একসঙ্গে গ্রামের সব মানুষকে প্রত্যাবাসন করা ও রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী হিসেবে উত্থাপন না করা। এছাড়া প্রত্যাবাসনে প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও বাংলাদেশসহ দাতা সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা।

৮ আমর্ড পুলিশের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর (বিপিএম) বলেন, আজ রোহিঙ্গাদের গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে তারা একটি সমাবেশ করেছে। তাদের এই সমাবেশ ঘিরে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।